রবিবার, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৪:৩৭

শিরোনাম :
কথা দিচ্ছি আপনাদের সেবায় আমি সর্বদা পাশে থাকবো : চেয়ারম্যান প্রার্থী এসএম জাকির হোসেন উপজেলার উন্নয়নে আপনাদের পাশে আমি সর্বদা রয়েছি -ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন মোটরসাইকেল প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা, আহত-২ সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়া কে এই জাকির হোসেন প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের মন জয় করছেন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম যারা আমার জন্য কাজ করেছে আমি তাদের রেখে কখনো পালিয়ে যাইনি-এসএম জাকির হোসেন রেমিটেন্স আহরণে রূপালী ব্যাংকের ২ দিন ব্যাপী ক্যাম্পেইন সম্পন্ন সদর উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিনের মনোনয়ন বৈধ ঘোষনা বরিশালের দুই উপজেলায় বৈধতা পেলেন ২৫ প্রার্থী ঝালকাঠিতে বেপরোয়া ট্রাক কেড়ে নিল ১৪ প্রাণ

ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত ওরা….

dynamic-sidebar

নিজস্ব প্রতিবেদক:: ঈদ মানে আনন্দ। ঈদ মানে খুশি। ঈদ মানে একসাথে পরিবারের সকলকে নিয়ে আনন্দ করা। আত্মীয়-স্বজনের সাথে সাক্ষাত করা। কিন্তু সকল প্রকার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বরিশাল নগরীর পলাশপুর ৫ নং ওয়ার্ডের ৭নং আর্দশ গুচ্ছগ্রাম মধ্য কালবাড সংলগ্ন রহমানিয়া কেরাতুল কোরআন নুরানী হাফিজি মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডংটির শতাধিক এতিম শিশুরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এতিদের জীবন কাহিনী।

এতিম শিশু মানিকসহ কয়েকটি শিশু কেঁদে কেঁদে বললেন ধনী লোকেরা তিন-চার সেট কাপড় কিনছি। আর আমরা এতিম শিশুরা একটা পোষাক ও কপালে জুটেনা। আমরা এতিম বাবা-মা ছোট রেখে মার গেছে। আমাদের কাছে ঈদ মানে কষ্টের একটা দিন। কারণ ভালো জামা-কাপড়, ভালো খাবার কেউই দেয়না। যাদের বাবা-মা এ পৃথিবীতে নেই। সত্যিই তারা খুবই অসহায়। কেননা বাবা-মা শত দুঃখ-কষ্টের মাঝেও চেষ্টা করে। ছেলে-মেয়েদের একটু ভালো খাবার ও সুখ দিতে। সন্তানের আবদার গুলো পূরন করতে। কিন্তু যাদের বাবা-মা নেই তারা তাদের আবদার গুলো কাকে বলবে। কেবা তাদের আবদার গুলো পুরন করবে। যাদের বাবা-মা নেই তারা নিরবে তাদের সপ্ন গুলো নিজ হাতে গলা টিপে মেরে ফেলে। কেননা যে সপ্ন পুরণ করার মত কেউ নেই।

এতিমদের ঈদ হল এমন যদি কেউ একটু দয়া করে খেতে দেয় তাতেই তারা খুশি। কিন্তু যখন তাদের বাবা-মার কথা মনে পরে তখন সে মনে করে এ পৃথিবীর মধ্যে সেই সবচেয়ে বেশি দুঃখি। দেখা গেছে, নগরীর পলাশপুর ৫ নং ওয়াডের ৭নং আর্দশ গুচ্ছগ্রাম মধ্য কালবাট সংলগ্ন রহমানিয়া কেরাতুল কোরআন নুরানী হাফিজি মাদ্রাসার ও লিল্লাহ বোর্ডটির শতাধিক এতিম শিশু এবার ঈদে পোষাক থেকে বঞ্চিত। এতিম শিশুরা জানায় নতুন পোষাক নেই আমাদের তাই আমরা পুরান ছেরা কাপর দিয়েই এবার ঈদ করবো।

তারা কেঁদে কেঁদে আরো বলেন, ঈদের দিন সবাই তার মা-বাবাকে সাথে নিয়ে নামাজ পরে সেমাই, পোলাউ, মাংস খায় কিন্তু আমরা তা কোন সময়ই পাইনা। তিন বেলাই খেতে হচ্ছে ডাল-ভাত। পাচ্ছেনা ভালো মানের খাবার। দেখার কেউ নেয়। অনেকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে আনেক এতিম শিশুরা প্রতিবছর পায় জামা প্যান্ট। আমাদের জ্যামা প্যান্ট ধরকার নেই। শুধু একটা পাঞ্জামি পেলেই আমরা খুশি। তাও আমরা পাইনা। শুধু তাই নয় এই মাদ্রাসাটি কোন বছর শীতেও তাদের কপালে একটি গরম পেষাক জুটেনা। এসব কোমলমতি শিশুদের দুর্দশায় সাহায্যের হাত বাড়ায়নি কেউ।

এবার ঈদে কেউ তাদের পাশ্বে দাড়াবে কিনা এখন পর্যন্ত তা দেখা যাচ্ছেনা। কোন ব্যাক্তি ছোট ছোট এতিম শিশুদের এবার ঈদে একটু সেমাই, চিনি, দুদ অথবা খাবার দিলে এতিমদের মুখে একটু হাঁসি ফুটতো। ফলে বিপাকে পড়েছেন এতিমখানার পরিচালক মো:নুরুল ইসলাম ফিরোজী। প্রায় ৫ বছর আগে নগরীর পলাশপুর ৫ নং ওয়াডের ৭নং আর্দশ গুচ্ছগ্রাম এলাকায় গড়ে উঠেছে রহমানিয়া কেরাতুল কোরআন নুরানী হাফিজি মাদ্রাসার ও লিল্লাহর বোর্ডটির নামের এই এতিমখানা। মো:নুরুল ইসলাম ফিরোজীর যৌথ প্রচেষ্টায় এতিমখানাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই মানুষির গভীর ভালোবাসায় এখানে ঠাঁই মেলেছে শতাধিক এতিমের স্থান। মাদ্রারায় আয় বলতে ফিরোজীর প্রতি বছর ছোট খাটো মাহফিল থেকে আসা অল্প কিছু অর্থ। নিজের পৈতিক সম্পতি বিক্রি করে এতিমদের রক্ষা করে চলেছেন তিনি।

এ থেকে এতিমদের মুখে দু’বেলা ডাল-ভাত তুলে দিতে পারলেও রমজান মাসে এবং বছরের প্রথম দিন ঈদের দিন পোশাক দেওয়া তা পক্ষে কোন মতেই সম্ভব হয়না। মাদ্রাসার পরিচালক বলেন, ‘এতগুলো মুখে খাবার তুলে দিতেই অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। বর্তমানে বাজার ও চালের আনেক দাম। এসবের ব্যবস্থা করতে গিয়ে নিজের বসতভিটা পর্যন্ত বিক্রি করেছি। বস্তির কিছু দিন খেতে খাওয়া মানুষ শিশুদের দেখাশুনা ও তাদের জন্য রান্নার ব্যবস্থা করেন। এর বাইরে তাদের জন্য নতুন পোষাকের ব্যবস্থা করার মতো সামর্থ্য আমার নেই।’

তিনি আরও বলেন, বেসরকারিভাবে অনেকে শিশুদের জন্য পোষাক এবং কি সাহায্য পেলেও এতিমদের খোঁজ কেউই রাখে নি। ঈদে তাদের নতুন কাপড় কিনে দিতে পারছি না। এতিমদের নিয়ে অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। পোষাক নেই তাদের। ছাত্রদের নিয়ে কি করবো ভেবে পারছিনা। অনেকের কাছে সাহায্য চেয়েছি কিন্তু কেউ কোন সাড়া দেয়নি।

সূত্রমতে, ৬ মাস আগেও একটি ভাড়া বাড়িতে ছিল এই এতিমখানা ও মাদ্রাসাটি। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকা ও নিউজ পোর্টালে সচিত্র ফিচার প্রকাশিত হলে তা নজরে আসে দক্ষিনঞ্চলের অভিবাভক মন্ত্রী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর। পরবর্তীতে তিনিসহ মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ, সাবেক এমপি তালুকদার মো. ইউনুসসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা সশরীরে উক্ত মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন এবং শতাধিক এতিম ছাত্রের বাস্তব অবস্থা অবলোকন করে জেলা পরিষদের মাধ্যমে ১৫ লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করেন। সেই অনুদান দিয়ে জমি ক্রয়, চারতলা ভিত্তির ওপর ১ তলা ভবনসহ অন্যান্য স্থাপনার কাজ ইতোমধ্যে ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে চলছে প্লাস্টারের কাজ।

এ দিকে অনুদানকৃত টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে চরম অর্থ সঙ্কটে ভুগছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। তার ওপর মরার ওপর খরার ঘায়ের মতো রয়েছে পানি ও বিদ্যুৎ সমস্যা। তিনি প্রতিবেদককে বলেন,আল্লাপার্কের ইচ্ছায় অবশেষে মন্ত্রী মহাদয়ের সহযোগীতায় অবশেষে মাথা গজার ঠাঁই হলো। ৪তলা ভবনের এক তলার কাজ এখন পর্যন্ত শেষ করতে পারিনি। এর মধ্যে চলে এলে ঈদ। এখন আরো সমস্যায় পড়েছি। আমার ছোট বাচ্চাদের নিয়ে এবার ঈদে কি করবো। কে দিবে ওদের একটা করে নতুন পাঞ্জাবি। তিনি আরো বলেন,অন্যদিকে মাদ্রাসার কাজ সম্পূন করতে হলে এখন অনেক অর্থে প্রয়োজন।

বর্তমানে কোন সাহায্যে না পেলে আমার মনে হয় মাদ্রাসাটি চলানো আমার উপরে সম্ভব নয়। এখানে কোন পরিচয় না থাকায় পথশিশুদের ঠাঁই মিলেছে। জেলা প্রশাসক ও ধনী ব্যাক্তিদের একটু দৃষ্টি কমনা করছে এলাবাসী।

তারা আরো জানায়,জেলা প্রশাসনের একটু দৃষ্টি দিলে মাদ্রাসাটির অনেক উন্নয়ন হতে পারে। সাহায্য পাঠাতে আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক সঞ্চয়ী হিসাব নং ০১০১১২০১২৬৪৫৪ অথবা মাদ্রাসার বিকাশ নাম্বার ০১৯২৪৬১২৯১৮।

আমাদের ফেসবুক পাতা

© All rights reserved © 2018 DailykhoborBarisal24.com

Desing & Developed BY EngineerBD.Net